Header Ads

ব্যর্থ প্রেমের জন্য বাংলা দুঃখের কবিতা। Bengali sad poetry for unsuccessful love

 


কবিতাপ্রেমিক হতে পারলে কই?

Surfe.be - Banner advertising service

আজ আমাদের পঞ্ছম বিবাহবার্ষিকী,

ভেবেছিলাম আজ হয়তো নতুন করে তোমায় পাব

প্রতি বছরই আমি এই দিনটিতে , শুধু এই দিনটি কেন

প্রতিটা দিনই অপেক্ষায় থাকি,

তোমায় নতুন করে পাবো বলে, তোমায় নতুন করে চিনব বলে

কিন্তু প্রতিদিনের মত আজ ব্যর্থ হৃদয়ে

একা আমি, সর্বস্বহারা

তোমার মনে আছে আমাদের বিয়ের কথা

আমি চাইতাম আমার প্রেম করে বিয়ে হবে,

কিন্তু হল উলটো প্রেমের বদলে দেখাশুনা করে বিয়ে হল আমার

তাতে কোন আক্ষেপ ছিল না আমার

আমাদের বাড়িতে যখন তুমি তোমার পরিবারের সাথে

আমায় দেখতে এসেছিলে, প্রথম দেখাতেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছিলাম আমি  

ওই রুপ, যেন কোন সিনেমার হিরো, আর আমি অতি সাধারন দেখতে একটি মেয়ে

কি করে যে আমায় তোমার পরিবারের পছন্দ হল, জানিনা !!!

কিন্তু ভগবানের কৃপায় , আমার ইচ্ছা পূর্ণ হল,

আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেল

আমাদের তিনজনের পরিবার অর্থাৎ বাবা, মা আর আমি

এই তিনজনের পরিবার থেকে পাড়ি দিলাম এক অথেই সমুদ্রে

অথেই সমুদ্র ছাড়া আর কি বা বলব?

তোমার বাবার অর্থাৎ আমার শ্বশুর মশাইয়ের পাঁচ ভাই,

আর প্রত্যেক ভাইয়ের তিনটি করে মেয়ে এবং দুটি করে ছেলে

আমার তো মনে হত, যেন প্রতিদিনই এখানে মেলা বসে

কালরাত্রির দিন যখন তোমার মায়ের পাশে শুয়ে ছিলাম,

শাশুড়িমা বললেন, এত বড় পরিবারে আমায় নিজের খেয়াল নিজেকেই রাখতে হবে

আমিও বাধ্য মেয়ের মত মাথা নেড়ে ছিলাম, আর কি বা করতাম

তাছাড়া আমি ছিলাম বাড়ির বড় বউ, সমস্ত দায়িত্বইতো আমার !!!

এক সপ্তাহ শুধু লেগে গেল তোমার ভাই বোনেদের নাম মনে রাখতে রাখতে

কিন্তু তোমায় চিনা আর হল না

সকাল বেলা তুমি বেরিয়ে যেতে

আর আমি ব্যস্ত থাকতাম ঘরের নানান কাজে,

তারপর তুমি রাত্রে ফিরতে সেই দশটায়,

আর আমি বাড়ির সব কাজ সেরে সেই বারোটায় , আমাদের বিছানায়

যখন তুমি তোমার ঘুমের রাজ্যে স্বপ্ন দেখতে ব্যস্ত

বিয়ের দুদিন পরে যখন আমার বাবার বাড়ি গেলাম তোমার সাথে,

পিসতুতোমাসতুতো ভাই বোনেরা আমায় বসিয়ে রেখে

জানতে চাইল, তুমি কেমন? তুমি কতটা রোমান্টিক?

কি উপহার দিয়েছ তুমি আমায় বাসর রাতে?

কি বলব তাদের ভেবেই পাচ্ছিলাম না……

কখনও চুপ করে থেকে কিংবা কথার মোড় ঘুরিয়ে ওদের কোন প্রশ্নের জবাব দেইনি

আর কি করতাম? কি বলতাম ওদের?

আমি কি বলতাম যে, আমি তোমায় চিনার সময় টুকু পাইনি নাকি তুমি আমায় চিনতেই দাওনি

বাসর ঘরে উপহার তো দুরের কথা, তুমি তো আমায় কথা বলার সময়টুকু দাওনি

ঘরে ঢুকেই তুমি ব্যস্ত ছিলে আমার শরীর নিয়ে খেলতে, মনের খবর নিলে কোথায়?

বড্ড চাপা স্বভাবের তুমি, কথা কম বল……

কিন্তু আমি তো তোমায় আমার কথার সাথী হিসাবে পেতে চেয়েছিলাম

চেয়েছিলাম তুমিও আমার সাথে পায়রার মত বকম বকম কর

কিংবা যখন আমি অনেক টা সময় ধরে তোমার পাশে বসে বক বক কুইন এর মত

বকর বকর করে যাচ্ছি, ঠিক সেই সময় তুমি আমার কথা থামানোর জন্য

হঠাৎ করে আমার লিপস্টিক লাগানো গোলাপি ঠোঁটে, তোমার ওই গোঁফের আড়ালে থাকা

পুরু ঠোঁট ছোঁয়ালে, আর আমি কথা হারিয়ে আমার সবটুকু নিয়ে হারিয়ে গেলাম তোমার ওই উষ্ণ নিশ্বাসে

বাবার বাড়িতেও তুমি কারোর সাথে বেশী কথা বলতে না

ভেবেছিলাম, ওখানে হয়তো তোমায় কিছুটা হলেও চেনার সময় পাব,  

সময় পাব তোমার সাথে একান্তে কিছুটা সময় কাটানোর

কিন্তু সেখানেও বাধা বাধল, তোমার শ্বশুর বাড়ির আদর আর আমার ছোট ভাইবোনেরা

বাবার বাড়িতেও বেশিদিন থাকা হল না,

তোমার অফিসের কাজের চাপ তোমায় টেনে নিয়ে গেল, তোমার নিজের বাড়িতে  

তাই একান্ত বাধ্য হয়ে আমায়ও আসতে  হল তোমার সাথে

বিয়ের এক মাস পরে যখন আমাদের মধুচন্দ্রিমায় যাবার কথা উঠল,

ভেবেছিলাম এবার হয়তো তোমায় নিজের করে একটু একা পাবো

কিন্তু তাতেও বাধা বাধল তোমার ভাই বোনেরা;

সবাই মিলে চলল আমাদের হানিমুনে

ওটা হানিমুন নাকি পিকনিক, তা আজ বুঝিনি

হানিমুনে থুড়ি পিকনিকে, সারাদিন তোমার ভাই বোনেদের সাথে

শপিং আর ঘোরা ফেরার পর যখন হোটেলে ফিরতাম,

ভাবতাম এবার হয়তো তোমার সাথে সারা রাত বসে গল্প করবো

কিন্তু কোথায় কি?

তুমি আবার ব্যস্ত হয়ে পড়তে আমার শরীর নিয়ে খেলা করতে

আচ্ছা শরীর টাই কি সব? মন টা কি কিছু নয়?

বড্ড কষ্ট হত জানো……

তোমার মনে আছে, আমাদের হানিমুনে থুড়ি পিকনিকে

যখন তোমার বোনেরা আমার সাথে শপিং করছিল, কোন ড্রেস ওদের পছন্দ হচ্ছিল না

কাউনটারে দাঁড়িয়ে তুমি আরা তোমার ভাইয়েরা; খুব বিরক্ত হচ্ছিলে তোমরা

বুঝতে পারছিলাম আমি

ঠিক তখন হলুদ রঙের ওই শারি টা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল

লজ্জার মাথা খেয়ে হঠাৎ করে শারি টা হাতে নিয়ে দোকানী কে দাম টা জিজ্ঞেস করতে যাব

এমন সময় হঠাৎ করে তোমার বোন আমার হাত থেকে ছিনিয়ে নিল শাড়িটা

ওর পছন্দ হয়েছিল খুব আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল

কিন্তু যখন আমায় জিজ্ঞেস করল, যে আমি কিছু মনে করেছি কিনা

ওর ওই ব্যবহারে? আমি বললাম না

আর কি বলতাম? তো আমার ছোট বোন

ওর ওপরে কি রাগ করতে পারি?

যার ওপর আমার অভিমান, রাগ

সেই মানুষ টা যখন আমায় বুঝে না,

তখন আর অন্য কারোর ওপরে অভিমান করে কি লাভ?

ওই ঘটনা টা আমার খুব খারাপ লেগেছিল

তুমি সব কিছু দেখলে, কিন্তু কিছুই কি বুঝতে পারলে না

তোমার জায়গায় বাবা হলে বুঝে যেত, আমার পছন্দের কথা

আর যেমন করে হোক, শাড়িটা আমার জন্য কিনে আনত

কিন্তু তুমি তো আমার পছন্দঅপছন্দ কোন কিছুই বোঝনি,

বুঝতেই চাওনি

হানিমুন থেকে বাড়িতে ফিরে আবার সেই একই রুটিন

আমি সবই মানিয়ে নিয়েছিলাম কিন্তু শুধু তোমার সাথে সামান্য একটু

একান্ত সময় কাটাতে চেয়েছিলাম

চেয়েছিলাম কোন এক জ্যোৎস্না রাতে তুমি আর আমি

খোলা ছাদে দাঁড়িয়ে চাঁদের জ্যোৎস্নায় স্নান করব

আর আমি গাইব, তুমি শুনবে ……

আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে, আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে, বসন্তের এই মাতাল সমীরণে আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে, আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে। যাবো না, যাব না যে, যাব না যে, রইনু পড়ে ঘরের মাঝে যাবো না গো, যাব না যে রইনু পড়ে ঘরের মাঝে। এই নিরালায়, এই নিরালায় রব আপন কোণে, যাব না এই মাতাল সমীরণে। আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে, আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে। আমার এ ঘর বহু যতন করে ধুতে হবে, মুছতে হবে মোরে। আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে যদি আমায়, যদি আমায় পড়ে তাহার মনে বসন্তের এই মাতাল সমীরণে। আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে, আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে। বসন্তের এই মাতাল সমীরণে আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে।

চেয়েছিলাম কোন এক বৃষ্টির দিনে,

তুমি আর আমি ভিজব বাগানে,

তারপর আমাদের ওই ভেজা শরীরে

একে অপরের কাছে পাশা পাশি বসে,  

চোখে চোখে চেয়ে থেকে হারিয়ে যাব কোন সুদূরে

কিন্তু আমার সেসব স্বপ্ন আজ স্বপ্নই থেকে গেল

আজ আমি আমার আমার স্বপ্ন নিয়ে একা বাঁচি

আমার স্বপ্নে তুমি আসো,

কিন্তু আসো না বাস্তবে

জানি আমি তুমি স্বামী হিসাবে কোন অবহেলা আমায় করনি,

আমায় কোন অভাব দাওনি

আজ পাঁচটা বছরে অনেক স্বপ্ন দেখেছি তোমায় নিয়ে,

কিন্তু আমার স্বপ্ন রয়ে গেছে স্বপ্নই

এই পাঁচ বছরে তুমি রয়ে গেলে শুধু স্বামী হয়েই,  

আমার স্বপ্নের সেই প্রেমিক হতে আর পারলে কই?

                                            Read this Post in Video in my Youtube Channel





No comments