আজকের বাস্তবের এক মধ্যবিত্ত বেকার যুবকের আত্মকথা। একটি বেকার যুবক যে মাথার ওপর গুরু দায়িত্ব নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে, খালি পেটে দিনের পর দিন গায়ের গতর খাটিয়ে, টিউশন পরিয়ে অন্য তুলে দেয় বুড়ো বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনের মুখে। এত বড় বলিদানের পরেও সমাজে তার কোনো দাম নেই, কারণ সে বেকার। এই মধ্যবিত্ত বেকারদের জীবন খুব সুন্দর করে তুলে ধরার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র এই কবিতায়, যার নাম – "আমি সেই ছেলে"।
আমি সেই ছেলে
------------------------
আমি সেই ছেলে,
যাকে তোমরা 'ক্যাবলা', 'বোকা', 'হাঁদা' বলে ডাকো।
আমি সেই ছেলে,
যে তোমাদের কাছে উচ্ছিষ্টের সমান।
আমি সেই ছেলে,
যে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শুধু তোমাদের জন্য,
অথচ তোমরা আমাকে কোনো দামই দাও না।
আমাকে দাও না ভদ্র সমাজে ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার,
আমাকে তোমরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত কর।
আমাকে তোমরা কর তোমাদের রাজনীতির হাতিয়ার,
শুধুমাত্র দুটো রুটির বিনিময়ে তোমরা আমাকে দিয়ে –
গোলাবাজি, ছিনতাই, ধর্ষণ, অকাজ-কুকাজ করাও।
তারপর যখন তোমাদের কাজ শেষে –
ফুরিয়ে যায় আমার প্রয়োজন
তখনই তোমরা আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দাও নর্দমায়,
ডাস্টবিনের নোংরা জায়গায়।
আমি সেই ছেলে –
যে উচ্চশিক্ষার পর দুটো টিউশন পরিয়ে,
গায়ের গতর খাটিয়ে
অন্ন তুলে দেই বুড়ো বাবা-মা, ছোটো ভাই-বোনের মুখে।
তবুও সমাজে আমার কোনো দাম নেই
কারণ আমি বেকার।
কিন্তু এভাবে চলতে পারে না ;
একদিন আমি, আমাদের মতো ছেলেরা
হয়ে উঠব কালবৈশাখীর ঝড়,
উড়িয়ে নিয়ে যাবো পুরো সমাজকে
ধংস্ব করবো তার রীতি-নীতি, আইন-কানুনকে।
"আমি সেদিন হবো শান্ত
যেদিন ভীম রণভূমে আর রনিবে না"।
Post a Comment