Header Ads

বস, ক্যান্টিন ও রাজনীতি। ডায়েরির পাতা থেকে -৪র্থ । Boss, Cantene o Rajniti. Dayerir Pata Theke - Choturtho || From the Page of Diary - Fourth

তারিখ - ইং ৫.২.২০১৯
Dayerir pata theke





আবার একটা দিন শুরু হয়ে শেষ হতে চলল, জীবনের একটা দিন কমে গেল। দিনগুলো যেন ধীরে ধীরে অতীত হয়ে যাচ্ছে, সময়ের সাথে সাথে আমিও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছি। এটাই স্বাভাবিক; এটাই প্রকৃতির নিয়ম, আর আমি তো প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে পাড়ি না। হ্যাঁ ! যদি আমি কলকাতা পুলিশ হতাম কিংবা পশ্চিমবঙ্গের কোনো এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক হতাম, তাহলে হয়তো প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে পারতাম। সরি, ভুল হয়ে গেল, এমনটা বলা উচিত হয়নি, কেউ শুনলে এক্ষুনি হয়তো আমার কারাবাস হয়ে যেতে পারে। যাক ! এসব মজাই ছিল, যদিও রাজ্যের এ'ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ইয়ারকি করা উচিত নয়। এর জন্য খুবই দুঃখিত আমি। রাজ্য-রাজনিতি এমন এক স্পর্শকাতর জিনিস, যা নিয়ে সত্যিই প্রকাশ্যে আলোচনা করা উচিত নয়। কে জানে ? কখন কোথায় কি হয়ে যাবে ? যাক এসব কথা পরে হবে।
এবার আমার সারাদিনের কার্যকলাপ নিয়ে না হয় একটু পর্যালোচনা করা যাক। আজ আমার দিনের শুরুটাই হল বসের অর্ডার শুনে। এই বস এমন একটা জিনিস, যারা না অফিস, না বাড়ি কোথাও পিছু ছাড়ে না। এদের জন্য সাধারণ কর্মচারীদের ব্যক্তিগত জীবন ও অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। মনে হয় চাকরিটা ছেড়ে রেজিগ্নেশন লেটারটা এদের মুখের উপর ছুড়ে দেই। কিন্তু হায় রে , আমার পোড়া কপাল! দুর্ভাগ্যবশত কোনো উপায় নেই। চাকরিটা ছেড়ে দিলে তো না খেতে পেয়ে মরব। ব্যবসা করার ইচ্ছে আছে, কিন্তু মূলধন কোথায় ? তবে শুনেছি, 'ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।' ইচ্ছে তো আছে, দেখি কোনো উপায় বের হয় কিনা।
এবার আসি যে কথাটা বলছিলাম, অর্থাৎ দিনটা তো শুরু হল বসের অর্ডার শুনে। বস অর্থাৎ আমার ইমিডিয়েট বস সক্কাল সক্কাল কল করে প্রথমেই অর্ডার দিয়ে দিলেন, তারপর জিজ্ঞেস করলেনঃ
বসঃ সৌরভ, এখন তুমি কোথায় আছ? কখন অফিসে ঢুকবে ?
(আমি তখন সবে ঘুম থেকে উথেছিলাম। কি বলি, কি করি; ভেবে না পাই। তাই বাধ্য হয়ে মিথ্যের আশ্রয় নিতে হল।)
আমিঃ এখন ক্যান্টিনে খেতে যাচ্ছি। খেয়েই অফিসে ঢুকব।
তার কিছুক্ষনের মধ্যেই ম্যানেজারের ফোন। উনার নাকি দেরী হবে। কারণ উনার শরীর খারাপ, হেন-তেন, নানান অজুহাত।
এটা অর্থাৎ এই অজুহাত যদি আমি দেখাতাম তাহলে তো তখন আমার চৌদ্দগুষ্ঠির ষষ্ঠী পুজা হয়ে যেত। একেই বলে ভাগ্যের পরিহাস। আর কি করি ? বাধ্য হয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে, অফিসের জন্য বেরোতে হল। খাবার জন্য যখন ক্যান্টিনে ঢুকছি, তখন ক্যান্টিনের কাকু বাজারের ব্যাগটা হাতে নিয়ে, লুঙ্গি পরে, হাত নাড়াতে নাড়াতে বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। আমায় দেখে আবার ক্যান্টিনে ফিরে গিয়ে খাবারটা বেড়ে দিলেন। কিন্তু তখনও একটা ভয় কাজ করছিল আমার। ঠিক যে ভয়টা পাচ্ছিলাম, সেটাই হল। কাকু আবার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,
কাকুঃ স্যালারি হয়েছে ?
আমি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলাম,
আমিঃ না, না, স্যালারি হয়নি। আর তাছাড়া স্যালারি হলেও এ মাসে আমার খুব অসুবিধা আছে। টাকা দিতে পারব না।
আমি অবাক হই যে কাকু বারবার আমার কাছেই এত টাকা টাকা করেন কেন ? আমি কি ATM নাকি? এই সেদিনকে ২২০০ টাকা নগদ Advance দিলাম, তারপরেও কিভাবে টাকা চায় সেটা বুঝতে পারছি না। মাঝে মাঝে খুব রাগ হয়। মনে হয় এই ক্যান্টিন ছেড়ে দেই। পরে ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলে বুঝতে পাড়ি, এতটা সহজ নয় ক্যান্টিন ছাড়া। অনেক মজবুরি আছে, যা হয়তো ভাষাতেও বোঝানো যাবে না। যাক ক্যান্টিনের কথাতো হল। এবার আবার অফিসের কথায় আসি। অফিসে আজ আমার বস নিজে অর্ডার দিয়ে নিজেই Absent ছিলেন।
কি আর করা যাবে ? মালিক বলে কথা, ইনারা নিজের ইচ্ছা মত যা খুশি করতে পারেন, আমরা তো আর পাড়ি না।
আজ অফিসে ম্যানেজার দিদির বেশ গুণগান করলেন। দিদির একমাত্র অন্ধ ভক্ত বলে কথা। এদেরকে বলে বোঝানো যাবে না, এরা হলেন মধ্যপন্থী। এরা না তো পুরোটা প্রাচীন, না নবীন সমাজকে স্বীকার করেছেন। এরা খুবই ভয়ঙ্কর। নিজেদের সেই একগুঁয়ে আদর্শতে সদা সর্বদা সীমাবদ্ধ থাকে। নতুন কোনো সংস্কার, চিন্তা-ধারা কে কখনোই গ্রহন করে না। ইনি তো আবার সবজান্তা, সব বিষয়ে পারদর্শী। কথায় কথায় শুধু 'আমি সব পারি, কিন্তু করিনা কারণ করতে চাই না, টাকা দেয় না বলে।' আর এদিকে অরধেক কেন, অর্ধেকের বেশী কাজ আমাকে ছাড়া করতেই পারেন না। উনার উপর রাগ করব না হাসব সেটাই বুঝতে পারি না। থাক আজ অনেকের অনেক গুনাগুন হল। আজকের লীলা সাঙ্গ হল, আবার কালকের নতুন সূর্যের অপেক্ষা।
Dayerir pata theke

No comments