Header Ads

ডায়েরির পাতা থেকে - ৩ য় ।। Dayerir Pata Theke - Tritiyo || From the Page of Diary - 3rd

তারিখ - ইং ০৪.০২.২০১৯

আজকে আমার ডায়েরি লেখার কোনো ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু কি করব ? প্রত্যেকদিনের যে রুটিন আমি বানিয়েছি, তা তো আমাকে মানতেই হবে। আর তাছাড়া অনেকদিন ধরে যেমন কবিতা লেখা হচ্ছে না, তাই কবিতাও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, আর ফিরে আসছে না আমার হৃদয়ে। যদি এইভাবে ডায়েরীও নিয়মিত না লিখি, তবে আমার লেখালেখির অভ্যাসটাও নষ্ট হয়ে যাবে। আজ ভাবছিলাম, আমি ডায়েরিতে যা কিছু লিখছি, সেগুলো সবই আমার ব্লগে পোস্ট করে দেব। তারপর মনে হল, কেউ কি আদৌ পরবে আমার লেখা ? প্রত্যেক লেখকের একটা ভয় থাকে, যে তাঁর লেখা আদৌ কি পরবে ? স্বয়ং কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বোধহয় এই ভয়টা পেয়েছিলেন; তিনি ভেবেছিলেন তাঁর লেখা বোধহয় তাঁর জীবনাবসানের পরে লুপ্ত হয়ে যাবে। তাই হয়তো তিনি বলেছিলেন তাঁর কবিতায়, 'আজি হতে শতবর্ষ পরে, কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি কৌতূহল ভরে।' শুধু কবিগুরুই  বা কেন , বিদ্রোহী কবি কাজী নাজ্রুল ইসলাম ও হয়তো এই ভয়টা পেয়েছিলেন, তাইতো তিনি তাঁর একটা গানে এই ধরনের কিছু বলেছিলেন। গানটা ঠিক এই মুহূর্তে মনে আসছে না, শুধু এইটুকু মনে আসছে, ফুল নিয়ে কোনো গান ছিল, গানের শেষের লাইনটার মানে এটাই ছিল যে, সকাল হলে ফুল বাসি হয়ে শুকিয়ে গেলে ফুলটা ফেলে দিও, এরকম কিছু। সে যাই হোক, উনারা মহান হস্তি ছিলেন, সে তুলনায় আমি তো কিছুই না। আমার তো মনে হয়না যে আমি নিজেকে এখনও কোনো লেখকের পর্যায়ে নিয়ে গেছি। তাই ভয় পাবার কিছুই নেই। লোকে পড়লে ভালো, আর না পড়লে কিছুই করার নেই। তাই অবশেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, আমার একাকী বসে কলমের খোঁচায় ডায়েরীর পাতায় লেগে থাকা হিজিবিজি অক্ষর গুলো ব্লগে পোস্ট করব। সে যাই হোক, এটা যা হোক একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া গেল, কিন্তু এবার আরও একটা সমস্যা, শিরোনাম কি দেব ? প্রথমে ভাবলাম 'ডায়েরী', তারপর ভাবলাম 'আমার ডায়েরীর পাতা'।

ক'দিন ধরে দেখছিলাম ফেসবুকে বাংলাদেশের কবি ও লেখক মাননীয় মৃণাল রায় নিজের 'ডায়েরী' লিখে কিছু পোস্ট দিচ্ছিলেন, ভালো লাগল দেখে, তাই ভাবলাম আমিও ফেসবুকে লিখব। অবশেষে অনেক টানাপোড়ানের মধ্যে এই সিদ্ধান্তে এলাম যে, 'আমার ডায়েরীর পাতা' এই শীর্ষ নামে ব্লগেই পোস্ট করব। আজ করার কথা ছিল, কিন্তু সময় হল কোথায় ? সকালে ঘুম থেকে উঠেই রেডি হয়ে অফিস, অফিসে সারাদিন কলুর বলদের মতো খাটনি, তারপর রাত দশটায় বাড়ি ফিরে কাপড় কাচা, খাওয়া, এর পরে একটু মোবাইলে ইউটিউবে ভিডিও দেখা। আর সময় হলো কোথায় ?

এইভাবে চলতে থাকলে আমার কোনো কাজ আর হবে না। তাই কোনো একটা নিশ্চিত সিদ্ধান্ত আমায় নিতে হবে। অফিস এখন কোনোমতে ছাড়তে পারব না, কারণ আমার বর্তমানে যা আর্থিক অবস্থা তাতে চাকরিটা এখন খুব দরকার, তারপর কোর্স টা আছে। এই কোর্স টাতে আমি ভর্তি হলাম ঠিকই, কিন্তু কেন জানিনা এই ভিডিও এডিটিং কোর্স টার প্রতি কেমন যেন অনীহা জন্ম নিয়েছে, কোনো আগ্রহ পাচ্ছিনা এই কোর্স টাতে। আমি ঠিক কি যে চাই, সেটাই তো আমি ঠিক করে বুঝতে পারছি না। তবে এতদিনে এটা অন্তত নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, লেখালেখি টা আমার জন্য অবশ্যই দরকার। ওটা না হলে আমার কোনো অস্তিত্ব নেই।

আজ বন্ধুদের সাথে রাজ্যের গণতন্ত্র কতটা প্রশ্নের মুখে সেই নিয়ে কথা হল। সবাই এটা স্বীকার করেছে যে, সি বি আই কে গ্রেপ্তার করাটা সবচেয়ে ভুল হয়েছে রাজ্যের। মাননীয় অধীর বাগচি মহাশয়, প্রদেশ কংরেস সভাপতি তো বলেই দিয়েছেন, যে রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারী করা দরকার। কিন্তু তাতে রাঘব বোয়াল দের কি হবে তা তো জানি না, কিন্তু সবচেয়ে বেশী ভুক্তভোগী হবে আমাদের মতো চুনোপুঁটি রা। দিদি তো আজ ধর্নায় বসেছেন, কিন্তু এর ফল কি কিছু বেরবে ? খবরে পড়লাম, সুপ্রিম কোর্টে কাল শুনানি হবে। কে জানে, কাল কি হবে ? অনেকে বলাবলি করছে, এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের রাজ্য ভারতের মধ্যে থাকবে তো নাকি আবার একটা আলাদা দেশভাগ আমারা নতুন করে দেখতে পাব ? আজ ভাবছিলাম অন্যান্য বুদ্ধিজীবী দের মতো আমিও ফেসবুকে কিছু পোস্ট করব। কিন্তু ভয় হল, যেখানে সংবিধানের কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না, সেখানে আমার মৌলিক অধিকার কে আদৌ স্বীকৃতি দেওয়া হবে তো ? কিন্তু তারপর আবার মনে হল, 'ডরকে আগে জিত হ্যায়।' তাই ভয় কাটিয়ে নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরতে হবে, নিজের ভাষা, নিজের মতামত অন্যান্যদের সামনে তুলে ধরতে হবে। এখন এটাই করব, যা হোক হবে, সেগুলো পরে দেখা যাবে।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, 'কর্ম করে যাও, ফলের আশা করো না।' তাই আমিও আর ভবিষ্যতে কি হবে সেসব না ভেবে ভয় কাটিয়ে নতুন করে নতুন উদ্যমে নিজেকে মেলে ধরতে চলেছি, চলেছি আমার আপন ভাবনা, আপন মতামত বহির্জগতে ছড়িয়ে দিতে। অন্তত মনে এটুকু বিশ্বাস আছে যে, বাবা লোকনাথ সবসময় আমার সাথে আছেন, আমার সুখে-দুখে। জয় বাবা লোকনাথ।

No comments