Header Ads

ডায়েরির পাতা থেকে - ২য় ।। Dayerir Pata theke - Ditiyo || From the Page of Diary - 2nd

তারিখ - ইং ৩.২.২০১৯
আজ রবিবার, ছুটির দিন। তাই আজ সকালে ঘুম থেকে উঠতে অনেক দেরী হয়ে গেছিল। সকাল বললে খুব ভুল হবে, বলতে গেলে আজ আমি ঘুম থেকে উঠেছি দুপুরে, সকালে নয়। মানে আমি যখন ঘুম থেকে উঠি, তখন ঘড়িতে বাজে ১১.৫৫, অর্থাৎ বলতে গেলে দুপুরই।
ঘুম থেকে উঠেই অন্যান্য দিনের মত বালতি নিয়ে চললাম বাতরুমে লাইন দিতে, আসলে মেসে বা হোস্টেলে থাকলে এটাই সমস্ত অধিবাসী (আমাদের মত যারা) দের জন্য সর্বইব চিরন্তন নিয়ম, যেটাকে ইংরেজিতে কি যেন বলে, ও! মনে পড়েছে, 'Universal Truth'.
কিন্তু আজ স্নান হয়ে গেল, আমি জামাকাপড় পরে রেডি হয়ে গেলাম, কিন্তু খাবার এল না।
রেডি হয়ে গেলাম এইজন্য যে আজ আমার ক্লাস থাকে ভিডিও এডিটিং এর টালিগঞ্জে। খুব দেরী হয়ে যাচ্ছিল ; এমনিতে উঠতে দেরী হয়ে গেছে, তারপর আজকে আবার ব্রিগেডে সিপিএমের মিটিং, তাই রাস্তাঘাট জ্যাম হওয়ার কথা। তাই আর খাবারের আসার অপেক্ষা না করে রুম থেকে বেরিয়ে জুতো পরে বেরিয়েই পরেছিলাম প্রায়; হঠাৎ দেখি ক্যান্টিনের ছেলেটি খাবার নিয়ে উপরে আসছে।
আর কি করি ?
পুনরায় ব্যাগ - পত্তর রুমে ঢুকিয়ে, ক্যান্টিনের ছেলেটির কাছ থেকে খাবার নিয়ে বসে পড়লাম খেতে। খাওয়া হল, আমার দু'জন রুমমেটের সাথে গল্পও হল।
অবশেষে খাওয়া হয়ে গেলে, আর যেতে ইচ্ছা করছিল না। কি যে করি ?
সব ঐ যে আমার ঐ ভবঘুরে স্বভাবের দোষ। একটা কোর্সে ভর্তি হলাম, একদিন যেতে না যেতেই সেই কোর্সের ক্লাস করতে যেতে ইচ্ছা করছে না। এটা ঠিক কেমন যেন ! আর কি করি ? অগত্যা বাধ্য হয়ে স্যার কে ম্যাসেজ পাঠালাম যে পরীক্ষার জন্য আজ যেতে পারব না, সেই একদম ১০ তারিখ যাব। কিন্তু পরে মনে পড়ল ১০ তারিখ তো সরস্বতী পূজা, ওইদিন আদৌ ক্লাস হবে তো ? কথাটা মনে পড়ত না, যদি না আমার রুমমেট আমায় বলত। ঠিক আছে দেখা যাবে, ১০ তারিখ এখন অনেক দেরী আছে।
আজ তো নিজের দোষে ক্লাস গেলাম না, কিন্তু একটা কাজ যেটা অনেকদিন ধরে বাকী পড়েছিল, সেটা হয়ে গেল। ঐ যে চুলদাড়ি কাটা।
কিন্তু স্নান করার পরে চুল - দাঁড়ি কাটলাম, আর এমনিতে ঠাণ্ডা কাল, তাই চুলদাড়ি কাটার পর শুধুমাত্র মুখে  আর চুলে সামান্য সাবান দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। আর কি করব ? এই ঠাণ্ডায় একবার স্নান করতেই ফাটে, দ্বিতীয় বার কোণ দুঃখে করব ?
সে তো হল, চুল - দাঁড়ি কাটা হল, চুল ধোয়া হল, ফ্রেশ হওয়া হল, এবার ?
এবার আর কি ? লেপের তলায় ঢুকে মোবাইল ঘাঁটা।
এই তো চলছিল স্বাভাবিক নিয়ম।
কিন্তু আজ সারাদিনে কিছু ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে অবাক হলাম। না! না! আমার জীবনের কোনো ঘটনা নয় একেবারে আমাদের রাজ্যের, আমাদের দেশের ঘটনা।
আজকে আমার মোবাইলের News App - এ পড়লাম যে, ব্রিগেডে সিপিএমের সভায় নাকি লোকের বিশাল ভিড়, ঠিক যেন আগেরবারের তৃনমূলের সভার মতন।
এটা দেখে আমি ভাবছি, এত লোক যখন সিপিএম কে সাপোর্ট করছে, তাহলে সিপিএম আমাদের রাজ্যে একটি বিলুপ্ত প্রায় রাজনৈতিক দল কেন ?
কে জানে ? কজন আদৌ মিটিং এর জন্য এসেছিল, আর কজন ডিমভাতের জন্য, কে জানে ?
ভাল, খুব ভাল ! রাজ্যে সিপিএম আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে; দেখে খুবই ভালো লাগল।
 কিন্তু সন্ধ্যায় যে খবরটা শুনলাম, সেটা শুনে একেবারে আকাশ থেকে পড়লাম।                               তবে আকাশ থেকে কোথায় যে পড়লাম? মাটিতে নাকি পাতালে, সেটাই বুঝতে পারছি না ।
এত হেঁয়ালি না করে, ঘটনাটিই বলি, আজ আমার জীবনে এই ঘটনাটা প্রথম শুনলাম। রাজ্যের পুলিশ নাকি কেন্দ্রের CBI এর উচ্চপদস্থ অফিসারকে ৩-৪ ঘণ্টা গ্রেপ্তার করে রেখেছিল, এটা ওরা কোন ক্ষমতার বলে করল, সেটাই তো কোনোমতে আমার মাথায় ঢুকছে না।
আসলে ঘটনাটা হল, CBI এর মতে আমাদের রাজ্যের Police Commissioner নাকি Cheatfund -এর case টা ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছিলেন। তাই CBI সামান্য কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেছিলেণ। কিন্তু উনারা তো সঠিক নিয়মে কাজ করছিলেন। প্রথমে থানার Permission নেন Commissioner এর বাড়িতে যাবার জন্য, কিন্তু থানা অনুমতি না দেওয়ায়  Commissioner এর বাড়ির বাইরে থেকেই enquiry করতে চাইলে বিশাল পুলিশ বাহিনী উক্ত অফিসারদের সাথে ধস্তাধস্তি করে গ্রেপ্তার করে রাখে। এটা খুবই খারাপ জিনিস হল। কাল ওরা এসব নিয়ে Supreme Court এ গেলে কি হবে রাজ্যের ?
আজ Whatsapp এ এক বন্ধুর status এ দেখলাম উনি রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবাস্থা জারীর কথা বলছেন, উনি কি আদৌ জানেন রাষ্ট্রপতি শাসন জারী হলে রাজ্যের কি হবে ? আমি একটা জিনিস ঠিক করে বুঝতে পারছিনা যে, রাজ্য পুলিশের কোনো অধিকার না থাকা সত্ত্বেও ওরা CBI Officer দের arrest করল কিকরে?
আর আমাদের Commissioner যা বলছেন যে, তিনি নির্দোষ, তাহলে তিনি CBI Officer দের এত ভয় পাচ্ছেন কেন ?

কিন্তু আজ আমাদের কলকাতায় যা হল, সেটা হওয়া উচিত হল না। এভাবে তো কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।
আমরা যদি দেশটাকে একটা পরিবারের সাথে তুলনা করি, তাহলে কেন্দ্র বাড়ির কর্তা অর্থাৎ 'বাবা' আর রাজ্য হল 'মা'। এই বাবা ও মা-র মধ্যে যদি ঝামেলা বাঁধে তবে পরিবারের ছোট শিশু, সন্তানদের কি হবে ? অর্থাৎ দেশের ক্ষেত্রে আমারা যারা ছাপোষা নাগরিক, তাঁদের কি হবে ?
রাজ্যের বর্তমান যা অবস্থা, তাতে চিন্তা হচ্ছে -- ভবিষ্যতে আমারা আমাদের Nationality -'Indian' লিখতে পারব তো ?
ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, জাতে এমনটা আমাদের দেখতে না হয়।




No comments