Header Ads

জীবনটা যেন রোবটের মত। ডায়েরির পাতা থেকে -৫ম। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নিজের জীবনের চলার পথে। Life like a Robot. From my personal experience

জীবনে কখনও হার মেনো না 

তাং - ০৬.০২.২০১৯ (ইং) 

আজ ডায়েরি লিখতে একদমই ইচ্ছা করছে না। অনেক রাত্রি হয়ে গেছে। বিছানার কম্বলের ভিতরে শুয়ে ডায়েরিটা কোলে নিয়ে বসেছি। টাইম টা জানতে ইচ্ছা হল, তাই মোবাইলটা খুঁজে চলেছি, কে জানে কোথায় হারিয়ে গেছে ? 

অনেক খোঁজার পর হাতে পেলাম ফোনটা। লক কি টা প্রেস করতেই হাল্কা আলোর মধ্য হতে স্ক্রিনে ভেসে উঠল 'জাতির জনক' গান্ধীজীর ছবি। তার উপরে ইংরেজি তে জ্বলজ্বল করে লেখা আছে ০১ঃ২২। 

রাত প্রায় দেড়টা বাজতে চলল, চোখে হাল্কা ঝিমুনি আসছে। ঘুমোতে ইচ্ছা করছে, কিন্তু কি করি!!! 

ডায়েরীটা তো পিছু ছাড়ছে না। কোলের ওপর বসে একটানা অপলক দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে আছে। 

তাই বাধ্য হয়ে তার খিদা মেটাতে আমার কিছু নতুন - পুরানো স্মৃতি ধার দিতে হচ্ছে তাকে। তবে ও বলেছে পরে সুদ সমেত আসলটা পুরোপুরি ফেরত দেবে। 

ভাবছি আজ  ওকে আমার আজকের সারাদিনের স্মৃতিটা একটু ধার দিয়ে দেব। ও ঠিক ...... গুছিয়ে রাখবে। 

আজ......কে সকালে উঠতে অনেকটা দেরী হয়ে গেছিল। এতে আমার কি দোষ ? 

আমার দোষ নয় , ওটা  স্বপ্নের দোষ। 

আর কি বলব ? সকালে উঠে দেখি আমার থ্রি - কোয়ার্টার প্যান্টটা হাল্কা ভিজে গেছে, হাত দিয়েই আঠালো কিছু আঙ্গুলে লাগল। আঙ্গুলটা নাকের ডগায় আনতেই ব্যাপারটা খুব ভালো করেই বুঝে গেলাম। 

এতে আমারই বা কি দোষ ? !!!! 😔😔

সবই তো স্বাভাবিক প্রকৃতির নিয়ম। আর আমি তো তার বাইরে নই ......!!!! 😕😕😕

তাই উঠে প্রথমেই মোবাইলটা হাতে নিয়ে একটু সোশ্যাল মিডিয়ার সাইট গুলো ঘাঁটাঘাঁটি করলাম। তারপর চলে গেলাম স্নান করতে। 

স্নান করে ............ সেই আবার গতে বাঁধা রুটিন ............................................................................................................... ক্যান্টিনে খাওয়া, বাসের জন্য অপেক্ষা করা, বাস ধরা, অবশেষে !!! অফিসে পৌঁছানো। আর ... অফিস মানেই তো সেই বসের কচকচানি। 

আজ অফিসে একটা কথা বেশ মনে পড়ছিল । 

কথাটা হল,,,,,,,,,,,,,,,,
যারা / যে কিংবা কোন বস্তু যখন সদা সর্বদা আমাদের নিজের কাছে উপলব্ধ থাকে তখন আমরা তার সঠিক মর্যাদা দেই না, তাকে কোন গ্রাহ্য ই করি না। অথচ যখন সেই ব্যক্তি বা বস্তু আমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যায় কিংবা কেউ নিয়ে চলে যায়, তখনই আমরা তার আসল মুল্য বুঝি। 

আমার অফিস লাইফ টা ঠিক এরকম। এখন অফিসে সবসময় আছি, সব কাজ ...... সব মুহূর্তে, শত সমস্যার মধ্যে  হলেও করে দিচ্ছি যে কোন উপায়ে কোন কথাটি না বলে। 

তাই অফিসে এখন আমি একটা বসের অর্ডার মেনে চলা রোবটে পরিণত হয়েছি; 

মানুষ হিসাবে সেখানে আমার কোন কদর ই নেই। তাই মাঝে মাঝে ভাবি, এদের সবাইকে ছেড়ে, এই রোবট জীবন ছেড়ে একটু অন্য কোথাও অন্য কোনখানে সুখের খোঁজে বেরিয়ে পড়ি। 

কিন্তু উপায় নেই যে, তাই তো এইভাবে এই নরকিয় জীবন কাটাতে হচ্ছে। 😥😥😥😥😥😥

এই রোবট রুপী বিস্বাদ নরকিয় জীবনের চারিদিক থেকে চাপ --- ঊর্ধ্ব চাপ, পার্শ্ব চাপ, নিম্ন চাপ আর কেন্দ্র চাপ। 

অর্থাৎ সকালে বিছানা ছেড়ে উঠতেই নানান সমস্যা, সেইসব সমস্যা সামলে অফিস যাবার পথে হাজারটা ঝামেলা পেরিয়ে অফিস পৌঁছালে ও মাথায় ভেঙ্গে পরে কয়েক হাজার বজ্রের গতিতে পাহাড় সমান সমস্যা। তারপর অফিস সামলে ঘরে ফেরার পথে সমস্যা, ঘরে ফিরলে হাজারটা সমস্যা, পরিবারের সমস্যা। এত সমস্যার মাঝে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের খুশি, কান্না, সুখ, দুঃখ, সমস্যা সব যেন কোথায় হারিয়ে যায়। 

এইসব চাপ সামলে নিজেকে কথিন ভাবে এই বিশাল কুরুক্ষেত্রের প্রান্তরে একাকী সৈনিক রুপে প্রস্তুত করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। 

কিন্তু কি করি ? 

যুদ্ধে যখন যেতেই হবে, তখন প্রথম লক্ষ্য তো যুদ্ধে যেতা !!!!

তাই নিজেকে কঠিন থেকে কঠিনতর লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে প্রস্তুত করছি, যাতে আসল যুদ্ধে হেরে যেতে না হয়। 

যদি হেরেও যাই, তবুও শেষ পর্যন্ত যেন নিজের সবটুকু দিয়ে লড়াই করে যেতে পারি। বাকি...... টা !!!!!! মাথার উপর মহাদেব আছেন তো ...............।।। 

 

No comments