The four types of পদ in Bengali
আমাদের যে কোনো ভাষার জন্য ব্যাকরন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকরণ ছাড়া ভাষার কোনো অস্তিত্ব নেই। ব্যাকরণ ঠিক যেন আমাদের শরীরের পোশাকের মত। পোশাক ছাড়া আমরা উলঙ্গ। ঠিক তেমনি ব্যাকরণ ছাড়া যে কোনো ভাষা ও উলঙ্গ।
এখন আসছি ব্যাকরণের মুল উপদান নিয়ে।
১. ধ্বনিতত্ত্ব (Phonetics),
২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology),
৩. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) ও
৪ অর্থতত্ত্ব (Semantics)।
এই উপাদানগুলোর ওপর ভিত্তি করেই সব ভাষা ব্যাকরণে আলোচনা করা হয়।
বাংলা ব্যাকরণও এর ব্যতিক্রম নয়।
এই চারটির মধ্যে পদ একটি। এখন প্রশ্ন হলো পদ কাকে বলে?
এক কথায় বললে, বিভক্তি যুক্ত শব্দকে পদ বলে।
একটা উদাহরণ দিলে বিষয় টা ঠিক করে বোঝানো যাবে।
যেমন ধর, একটা বাক্য - "অমর স্কুলে যায়"।
এই বাক্যটিতে তিনটি শব্দ রয়েছে - "অমর" "স্কুলে" "যায়"। এই তিনটি শব্দই এক একটি পদ।
এবার আসি পদের প্রকেরভেদে।
পদ প্রাধানত ২ প্রকার
১) সব্যয় পদ
২) অব্যয় পদ
সব্যয় পদ আবার চার প্রকার
১। বিশেষ্য
২। বিশেষণ
৩। সর্বনাম ও
৪। ক্রিয়া।
এবার এই চার প্রকারের পদ নিয়ে একটু বিস্তৃত ভাবে আলচনা করা যাক।
১। বিশেষ্য পদ ঃ
যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, সমষ্টি, কর্ম, ভাব, কাল বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন - মানুষ, লেখক, রহিম, কলকাতা, মানালি, গঙ্গা, সংঘ, ইত্যাদি।
এই বিশেষ্য পদ আবার ছয় প্রকারের হয়, যেমন -
১) সংজ্ঞা বা নাম বাচক বিশেষ্য । যেমন - কমল, কলকাতা, গঙ্গা, রুপা, ইত্যাদি।
২) জাতিবাচক বিশেষ্য। যেমন - মানুষ, ফুল, ফল, ছেলে, মেয়ে, নদী, ইত্যাদি।
৩) বস্তুবাচক বিশেষ্য। যেমন - খাতা, কলম, জল, দুধ, রুপা, ইত্যাদি।
৪) সমষ্টিবাচক বিশেষ্য। যেমন - দল, সভা, সমিতি, সঙ্ঘ, বাহিনী, ইত্যাদি।
৫) ভাব্বাচক বিশেষ্য। যেমন - ভ্রমন, গমন, শয়ন, দেখা, ঘোরা, খাওয়া, ইত্যাদি।
৬) গুনবাচক বিশেষ্য। যেমন - রাগ, হিংসা, ঘৃণা, সুখ, দুঃখ, স্বাস্থ্য, দারিদ্র, ইত্যাদি।
২। বিশেষণ পদ ঃ
যে সকল পদ বিশেষ্য বা সরবনামের দোষ গুণ সংখ্যা পরিমাপ ইত্যাদি বোঝায়, তাদেরকে বিশেষণ পদ বলে। যেমন - গরম চা, নীল আকাশ, ভালো ছাত্র, বেলে মাটি, দুষ্টু মেয়ে, চমৎকার হাসি, ইত্যাদি।
এই বিশেষণ পদ আবার দুই প্রকার। যেমন -
১) নাম বিশেষণ। যেমন - তাজা মাছ, দক্ষ শ্রমিক, কালো ছেলে, ঠাণ্ডা হাওয়া, হাসিখুশি মুখ, ইত্যাদি।
২) ভাব বিশেষণ। যেমন - আস্তে বল, ধীরে চল, মৃদু মন্দ বায়ু বয়, ইত্যাদি।
৩। সর্বনাম পদ ঃ
যে সব পদ বিশেষ্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে সর্বনাম পদ বলা হয়। যেমন - আমি, তুমি, তারা, তোমরা, তিনি, তাহারা, সব, সকল, এই, ঐ, ইনি, ইহারা, ইত্যাদি।
সর্বনাম পদকে ১০ টি শ্রেনিতে ভাগ করা হয়েছে। যেমন -
১) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। যেমন - আমি, তুমি, আমরা, তোমরা, উনি, ইনি, তিনি, তারা, তাহারা, এ, ওরা, ইত্যাদি।
২) আত্মবাচক সর্বনাম। যেমন - নিজ, আপনি, স্বয়ং, ইত্যাদি।
৩) সমিপ্যবাচক সর্বনাম। যেমন - এ, এরা, ইনি, ইহারা, ইত্যাদি।
৪) দুরত্ববাচক সর্বনাম। যেমন - ঐ, ঐসব, ইত্যাদি।
৫) সাকুল্যবাচক সর্বনাম। যেমন - উভয়, সকল, সব, সমুদয়, ইত্যাদি।
৬) প্রশ্নবাচক সর্বনাম। যেমন - কে, কি, কাহার, কোনটা, কোন, কিসে, কার, ইত্যাদি।
৭) অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক সর্বনাম । যেমন - কেউ, যে কেহ, অন্য কেউ, ইত্যাদি।
৮) ব্যাতিহারিক সর্বনাম। যেমন - নিজে নিজে, আপনা আপনি, পরস্পর, ইত্যাদি।
৯) সংযোগজ্ঞাপক সর্বনাম। যেমন - যে, যা - তা, যিনি, যাহারা, ইত্যাদি।
১০) অন্যাদিবাচক সর্বনাম। যেমন - পর, অপর, অন্য, ইত্যাদি।
৪। ক্রিয়াপদঃ
যে সকল পদ দ্বারা কোনো কাজ করা বুঝায়, তাকে ক্রিয়া পদ বলে। অর্থাৎ, যে পদ দ্বারা বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের করা, হওয়া, খাওয়া, যাওয়া, ইত্যাদি বুঝায়, তখন তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন - পড়ছে, খেলছে, হাঁটছে, ইত্যাদি।
ক্রিয়াপদ দুই প্রকার। যেমন -
১) সমাপিকা ক্রিয়া। যেমন - রহিম বই পড়ে, করিম স্কুলে যায়, মেয়েরা খেলা করছে, ইত্যাদি।
২) অসমাপিকা ক্রিয়া। যেমন - নজ্রুল স্কুলে গিয়ে..., দিনে সূর্য উঠলে..., তোমরা হাত - মুখ ধুয়ে..., ইত্যাদি।
অব্যয় পদঃ
বাক্যের মধ্যে যেসব শব্দ বা ধ্বনির বিভক্তি বা বচনভেদে কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকে অব্যয় পদ বলে। যেমন - তবুও, কিন্তু, এবং, তথাপি, ইত্যাদি।
বাংলা ভাষায় অব্যয় পদ সমুহ তিন ভাগে বিভক্ত। যেমন -
১) খাঁটি বাংলা অব্যয়। যেমন - আর, ওরে, আহা, তবু, তাহার, ইত্যাদি।
২) তৎসম অব্যয় শব্দ। যেমন - সদা, যথা, যদি, সহসা, বরং, ইত্যাদি।
৩) বিদেশি অব্যয় শব্দ। যেমন - সাবাস, মালহবা, আলবৎ, মাইরি, ইত্যাদি।
Post a Comment